নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে শিগগির খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কোনো ইতিবাচক নির্দেশনা নেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির।
অন্যদিকে আগামী ১ নভেম্বর থেকে ৩৯ দিনের জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (ন্যাপ)। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী অক্টোবরেও সম্ভবত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। আর সে কারণেই নভেম্বর থেকে পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। করোনার মহামারির পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতোমধ্যেই কওমি মাদ্রাসা ছাড়া সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, চলতি বছরের অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা জেএসসি ও জেডিসি এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা স্থগিত করেছে। উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। পূর্বনির্ধারিত সময়ের পাঁচ মাস পার হলেও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সরকার।
পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী গত ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ২২ মার্চ তা স্থগিত করে সরকার। সাধারণ ছুটির পর অফিস-ব্যবসা-যানবাহনসহ সব খুললেও কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে পরিকল্পনা তৈরির জন্য একটি কমিটি কাজ করছে।
জানা গেছে, আগামী ১ নভেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর টার্গেট করে ৩৯ দিনের সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনায় দেখা গেছে বিদ্যালয় খোলা সম্ভব হলে ১ নভেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৯ দিন চলবে পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম। অক্টোবরের শেষ দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে প্রস্তুতি লাগবে ১৫ দিন। সেই হিসেবে অক্টোবরে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য নয়, শুধুই প্রস্তুতির জন্য।
নভেম্বরে খোলা সম্ভব হলে চলবে শুধু পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম। সংক্ষিপ্ত এই পাঠ-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না গেলে শ্রেণি মূল্যায়নেরও সুযোগ থাকবে না বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। ফলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অটো পাস দিতে হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য শ্রেণিতেও দেওয়া হবে অটো প্রমোশন।
ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছুটি বাড়ানো বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি অক্টোবরে খোলার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দিতে পারেনি। করোনা আক্রান্তের হার কমলেও সিঙ্গেল ডিজিটে এখনও যায়নি। আক্রান্তের হার সিঙ্গেল ডিজিটে গেলে তখন বোঝা যাবে কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে।